লাভ জনক ভাবে আগাম পেঁপে চাষ পদ্ধতি জেনে নিন | Profitable Early Papaya Cultivation Method

Profitable Early Papaya Cultivation Method
লাভ জনক ভাবে আগাম পেঁপে চাষ পদ্ধতি জেনে নিন

আজকে কথা বলব যারা নতুন উদ্যোক্তা এবং পেঁপে নিয়ে কাজ করতে চান একটু ফাঁকিবাজ কারণ পেঁপেতে কম পরিশ্রম করলেও চলে। আজকের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে জানতে পারবেন পেঁপের ক্ষেত্রে কিভাবে, কোন সময়, কোন জাতটি করবেন, কিভাবে পরিচর্যা করবেন, কতটুকু সার দিবেন, কোন সময় সার দিবেন, একটা গাছ থেকে কি ধরনের ফলন পেতে পারেন, কত টাকা লাভ হতে পারে এবং এখানে মালচিং ব্যবহার করবেন কি করবেন না এই সম্পূর্ণ বিষয় গুলো এই পোস্টের মধ্যে আলোচনা করব।



পেঁপে সাধারণত বছরে দুইবার চাষ করা যায়, একটি হচ্ছে

  1. আগাম চাষ
  2. সিজনাল চাষ

পেঁপের ক্ষেত্রে আপনি যদি আগাম বাজারদর ধরতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে চারা রোপণ করতে হবে সেপ্টেম্বর শেষ থেকে অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে সেপ্টেম্বরের যে মাঝে এই সময় চারা রোপণ করলে ফল আসবে ঠিক ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে, যে সময় বাজারদর সবচেয়ে বেশি থাকে। দ্বিতিয় ধাপ পেপের যে আসল সিজন, আমরা সবাই যেই সময় লাগায় ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে মার্চ এপ্রিল এবং পর্যন্ত চারা রোপণের সবচেয়ে পারফেক্ট সময়। 


পেঁপে চাষে জমি নির্বাচন

আমরা সাধারণত যেটা করি নতুন উদ্যোক্তা অথবা নতুন যারা কৃষক আছি তারা না বুঝে না জেনে যে জমিতে যে ফসল টি হবে না সেই ফসল যখন করতে যাই তখনই কিন্তু আমরা ভালো ফসল পাইনা আমাদের প্রজেক্ট লস হয়ে যায়। তাই পেঁপে চাষের ক্ষেত্রে আমরা খেয়াল রাখব অবশ্যই সেই জায়গায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো থাকবে অর্থাৎ পানি দ্রুত নেমে যাবে এরকম একটা জমি নির্বাচন করতে হবে সেই ক্ষেত্রে আদর্শ জমির মাটি হতে পারে বেলে দোআঁশ এবং দোআঁশ মাটি তবে খেয়াল রাখবেন বেলে- দোআঁশ এবং বালি মাটি যেখানে বালির পরিমাণ বেশি থাকে এরকম জায়গা কিন্তু পেপেঁর ক্ষেত্রে নির্বাচন করতে পারেন।


পেঁপের জাত নির্বাচন

যে কোন ফসল চাষাবাদের ক্ষেত্রে দরকার হয় তা সঠিক জাত নির্বাচন করা। আপনি যদি পেঁপের ভালো ফলন পেতে চান এবং সফল প্রজেক্ট তৈরি করতে যান আপনাকে দরকার সঠিক জাত নির্বাচন করা। 

পেঁপের জাত প্রধানত ২ প্রকার যথা

  1. হাইব্রিড জাত
    • কিউট লেডি
    • গ্রীন লেডি
    • টপ লেডি
  2. দেশী জাত
    • স্মার্ট শাহী

আপনি যদি হাইব্রিড জাত করেন তবে কিউট লেডি, গ্রীন লেডি, টপ লেডি এই জাতগুলো যথেষ্ট ভাল।


আপনি যদি দেশী পেঁপে করেন তাহলে খেয়াল রাখতে হবে যে সুস্থ সবল গাছ থেকে বড় সাইজের পেঁপে থেকে আপনি বীজটা সংগ্রহ করবেন। এখানে বীজের পরিমাণ কম হইলেও আপনি কিন্তু ভালো ফলন পাবেন। এখানে আরেকটি বিষয় খেয়াল করবেন দেশী জাতের ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রতিটি কাপে চার থেকে পাঁচটি চারা থাকা আদর্শ কারণ আপনি যে জায়গায় চারা রোপন করবেন সে জায়গায় আপনি গ্যারান্টি না যে সবগুলি মহিলা হবে কিনা। তাই প্রতিটি কাপে চার থেকে পাঁচটি করে চারা রাখতে হবে এবং সেখানে আপনাকে সঠিক জাতের সুস্থ গাছ থেকে বীজ বাছায় করে চারা তৈরি করতে হবে।


পেঁপে চাষে জমি প্রস্তুত

আমরা অনেকেই জানিনা পেঁপে চাষের ক্ষেত্রে আমরা কিভাবে জমি নির্বাচন করব। এখন আমি কি দুইটা চাষ দেবো নাকি, আমি শুধুমাত্র গর্ত করে লাগাবো, নাকি আমি কোন চাষ দেবো না এই জিনিসগুলো নিয়ে হয় আমাদের কনফিউশন। আমরা যেটা জানি যে জমিতে যদি আগাছা থাকে এবং পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা পারফেক্টলি না হয়, পানি জমে থাকে উচু-নিঁচু হয় তাহলে কিন্তু পেঁপের ক্ষেত্রে আপনি সঠিক ফলন পাবেন না আর মূলত এটাই ঘটে থাকে।

তাই আমরা যখন জমি নির্বাচন করব এবং জমি নির্বাচনের পরে আমরা তিন থেকে চারটি চাষ দিয়ে এবং মই দিয়ে জমিটাকে লেভেল করে নেব এবং চারিধারে ড্রেন করে নেব। তারপর 6 ফিট দূরে দূরে দেড় হাত করে গর্ত করে চারা রোপণ করতে হবে। তারপরে গাছের বয়স যখন 45 থেকে 50 দিন হয়ে যাবে তখনই কিন্তু আমরা পুরো জমিতে আবারো সার দিয়ে বেড করে নিতে পারব। 


সার ব্যবস্থাপনা

গোবর সার

পেঁপে চাষের ক্ষেত্রে আমরা অনেকেই ভালভাবে বুঝিনা যে একটা গাছে কি পরিমান সার দিব, কতটুকু সার দেব, কোন সময় সার দেবো এইগুলো আমরা বুঝতেই পারিনা এবং কনফিউজড একেকজন একেকভাবে আপনাকে ব্যাখ্যা দিবে একেকভাবে কথা বলবে আসলে আপনি কোনটা ডিসিশন নিবেন আপনি ভেবে পাচ্ছেন না এ রকমই ঘটছে।


আসলে একটা পেঁপে বাগান তৈরি করতে হলে, ভালো ফলন পেতে হলে আদর্শ সার ব্যবস্থাপনা কী হওয়া উচিত?

আপনি প্রতিটা মাদায় যে গর্তটা করলেন এই গর্তে আপনি যদি গোবর ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে মিনিমাম 15 থেকে 20 কেজি পর্যন্ত আপনাকে গোবর ব্যবহার করতে হবে এবং অবশ্যই খবরটা পঁচানো এবং ডি কম্পোজড হতে হবে আর যদি সেটা না হয় তাহলে প্রতি মাদাতে চার থেকে পাঁচ কেজি করে ভার্মি কম্পোস্ট ইউজ করবেন।


রাসায়নিক সার

রাসায়নিক সারের ক্ষেত্রে আপনাকে প্রতি মাদায় চারা রোপণের মিনিমাম 20 দিন আগে

  • প্রতি মাদায় 250 গ্রাম টিএসপি
  • প্রতি মাদাতে 200 গ্রাম পটাশ
  • প্রতি মাদাতে জিপসাম 80 থেকে 100 গ্রাম
  • খোল প্রতি মাদাতে 200 থেকে 250 গ্রাম 
  • প্রতি মাদাতে ম্যাগনেসিয়াম 50 গ্রাম ব্যবহার করবেন

এরপর আমরা যদি পোকামাকর বা নিমাটোট থেকে গাছকে রক্ষা করতে চাই সে ক্ষেত্রে 10 থেকে 15 গ্রাম হারে প্রতি মাদাতে বা প্রতি গর্তে কার্বোফুরান গ্রুপের ওষধ মানে আমরা যেটাকে কীটনাশক বলি এটা গাছের পোকামাকড় দমনের জন্য ব্যবহার করতে পারি।

এই পদ্ধতিতে আমাদের যেই সার গুলো থাকলো আমরা দশ দিন পর পর 2 বার মাটি টাকে আলগা করে দেব তারপর 20 দিন পরেই আমাদের চারা রোপণের উপযোগী হবে। 


আমরা অনেকেই চিন্তা করি যে আমরা কী একবারে সার দিয়ে দেবো? নাকি আমরা আবারও সার ব্যবহার করব? এই জিনিসটা আমরা সবাই কনফিউজডে এবং আমরা জানিনা যে কোন সময় সার দেয়া প্রয়োজন।


এখন দেখা যায় যে একবারে গাছ রোপণের সময় সার দিয়ে দিয়েছে পরবর্তীতে সার দেয়ার কোন খবর নাই। পেঁপের সাইজ ছোট হয়ে যাচ্ছে, গাছের রং হলুদ হচ্ছে কোনো সমাধান পাচ্ছেনা অনেক ওষুধ ব্যবহার করছে, খরচ বাড়ছে কিন্তু ফলন আসছে না এই ক্ষেত্রে আপনারা জেনে রাখুন এমওপি ইউরিয়া এই দুইটা সার প্রতি 1 মাস পর পর বা 25 দিন পর পর প্রতিটি গাছের গোড়া থেকে 1 ফিট থেকে 1 হাত দুরত্ব পর্যন্ত রিং করে 50 গ্রাম করে পটাশ ও 50 গ্রাম করে ইউরা ব্যবহার করবেন।


এছাড়া আমরা বোরণ এবং জিংক এর কথা বলি এইটা যদি মূল জমি তৈরীর সময় না দিয়ে গাছটা একটু বড় হয় মানে 40-45 দিন বয়স হয়িএ্বং মাটি যখন উঠিয়ে দিচ্ছি, বেড করে দিচ্ছি ওই সময় প্রতিটা গাছে 15-20 গ্রাম পর্যন্ত বোরণ ও জিংক ব্যবহার করতে পারি। এরপরে যদি আমাদের অন্য কোন নিউট্রিশন ঘাটতি হয় তাহলেও কিন্তু ওই বেড তৈরীর সময় ব্যবহার করতে পারি।



পেঁপের চারা রোপণ পদ্ধতি

পেঁপের ক্ষেত্রে আমরা কত বয়সের চারা রোপন করব? এটা নিয়ে আমরা খুবই কনফিউজড। এটার সমাধানে বলব আপনি যদি কোকোপিটে চারা তৈরি করেন তারা অবশ্যই চারার বয়স 40 থেকে 45 দিন হওয়া আবশ্যক। 40 থেকে 45 দিনের কম চারা যদি রোপণ করেন তাহলে দেখা যাবে যে গোড়া পঁচন ধরে, চারা ছোট থাকে, নেতিয়ে যায়, মারা যায় ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যা থাকে।


তাই আপনারা যারা আদর্শ পেঁপের বাগান তৈরী করতে চান অবশ্যই আপনারা কোকোপিটে নিচের ছবির মত এমনভাবে চারাগুলো তৈরি করে নিতে পারেন এবং আমরা ফাইনালি চারা টাকে মূল জমিতে রোপণ করতে পারি এবং সেটা অবশ্যই সার প্রয়োগের 20 থেকে 25 দিন পরে।


পানি নিষ্কাশন

তারপর বেড তৈরি করে অবশ্যই পানি নিষ্কাশন বা ড্রেনের ব্যবস্থা পারফেক্টলি তৈরি করতে হবে। আরেকটা জিনিস খেয়াল রাখবেন ড্রেনের ব্যবস্থা যদি পারফেক্টলি না করেন তাহলে আপনার পেঁপের প্রজেক্ট কিন্তু লোকসান হয়ে যাবে কারণ আপনার গাছে গ্রোথ থাকবেনা, পানি বের হবে না গাছ পচে যাবে নষ্ট হয়ে যাবে আপনার বাগানটা  সম্মুখীন হবে আদর্শ জমি তৈরি করতে হলে অবশ্যই আপনাকে চিনি বুঝতে পারলে করতে হবে গাছের গোড়া যেন থাকে অর্থাৎ ট্রেন থেকে অবশ্যই এক পেটের কমবেশি যেন গাছের গোড়া এবং ট্রেনের মধ্যে এরকম একটা গ্রাফ থাকে এবং 25 দিন করবেন আপনার যদি কোনভাবে পানি যেন না ধরে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে 


পেঁপের গাছের পরিচর্যা

আসলে পেঁপের ক্ষেত্রে কিভাবে পরিচর্যা করা উচিত? আমরা যদি দেশী পেঁপে রোপণ করি তাহলে অবশ্যই মহিলা এবং পুরুষ ফুল যখনই দেখা দেবে তখনই আপনাকে প্রতি 20 টি মহিলা গাছের জন্য একটি করে পুরুষ গাছ রাখতে হবে কারণ পেঁপে পরাগায়ণ ঠিক ভাবে না হলে পেপার সাইজ বড় হবে না ফল সেটিং হবে না। তাই আমরা যদি একটি আদর্শ দেশি পেঁপের বাগান চাই তাহলে কিন্তু প্রতি 20 টির ক্ষেত্রে একটা করে পুরুষ গাছ রাখতে হবে।


এছাড়াও আরো পরিচর্যা গুলো হল পেঁপের নিচের যে পাতাগুলো থাকে অর্থাৎ পেঁপের পঁচা পাতা, মরা পাতা, আগাছা পরিষ্কার ও নিড়ানির ব্যবস্থা করতে হবে।


পেঁপে চাষে মালচিং

আমরা অনেকেই জানিনা যে পেঁপের ক্ষেতে মালচিং ব্যবহার করবো কি করবো না। আপনি যদি আদর্শ পেঁপের বাগান তৈরী করতে চান এবং আগাম পেঁপের বাগান করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে মালচিং ব্যবহার করতেই হবে সে ক্ষেত্রে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে আপনি কোন সময় পেঁপের লাগাচ্ছেন। আপনি যদি বর্ষার সময়ে পেঁপে করেন তাহলে আপনার মালচিং দেওয়ার কোন প্রয়োজন নাই। আর আপনি যদি সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে মধ্যে পেঁপের রোপণ করেন তাহলে আপনি যদি মালচিং ব্যবহার করেন তাহলে শীতের মধ্যে পেঁপের গ্রোথটা ভালো থাকবে, আপনার নিড়ানি খরচ লাগবে না সার ব্যবস্থাপনা সহজ হবে এবং আপনার উৎপাদন খরচ কমে যাবে।


এরপরে আপনি দেখবেন যখন বৃষ্টি পড়া শুরু হবে মার্চ-এপ্রিল মাসের দিকে, তখন কিন্তু আপনি চাইলেই মালচিং উঠিয়ে জড়িয়ে রাখতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার জন্য সুবিধা হবে যে আপনার খরচও কমলো, পেঁপে গাছের গ্রোথও ভাল হল আগাম ফলনও পাবেন এ্ং বেশি ফলন পাবেন। মাঝখান থেকে আপনার উৎপাদনটা বেড়ে যাবে।


পেঁপে চাষে মালচিং ব্যবহার

মালচিং এ সার ব্যবস্থাপনা 

মালচিং এ সার ব্যবস্থাপনা কিভাবে হবে এটা নিয়ে আমরা খুবই কনফিউজড যে পেঁপের ক্ষেত্রে আমরা যদি মালচিং এ ঢেকে দেই তাহলে সার কিভাবে দেব? ড্রেন দিয়ে সার দেওয়া যাবে কিনা অথবা গাছের গোড়ায় দেব কিনা এরকম অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় আমাদের। আপনি যেটা করবেন সেটা হল পেঁপে গাছের গোড়া থেকে যখনই গাছের বয়স দেড় - দুই মাস হয়ে যাবে ঠিক তখন সারের প্রয়োজন হবে তার আগে কিন্তু এভাবে প্রয়োজন হবে না।
আর তখনই আপনি যদি মালচিং ব্যবহার করেন গাছের গোড়া থেকে 1 ফিট দূরে দূরে কাঠি দিয়ে অথবা ছিদ্র করে একটু গর্ত করে এক মুঠো করে একটু ইউরিয়া, একটু পটাশ, একটু জিপসাম ব্যবহার করে কিন্তু আমরা গাছের গ্রোথ স্বাভাবিক রাখতে পারি। এই ক্ষেত্রে অবশ্যই 25 থেকে 30 দিন পর পর এই সার যদি ওই একই গর্তে আমরা এক মুঠো করে ব্যবহার করি তাহলে দেখা যাবে যে আমাদের গাছের গ্রোথটা স্বাভাবিক থাকবে এবং আমাদের ফলনটা আমরা বড় সাইজ পাবো, বেশি পাবো এবং রোগ বালায়ও কম হবে।


পেঁপের রোগ বালাই দমন

পেঁপে চাষে আমরা পোকা মাকড় ও ছত্রাক জনিত সমস্যা নিয়ে অনেক বেশি ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয় সে ক্ষেত্রে রোগ বালাই দমনে আপনি চাইলেই সিডিউল অনুযায়ী 3 থেকে 4 টা স্প্রে দিয়েই অর্থাৎ 4 টা ঔষধ এক সাথে স্প্রে করে সাতদিন - আট দিন পর পর আপনার সব সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।


পেঁপে চাষে প্রতি 8 থেকে 10 দিন পর পর ব্যবহার করবেন 

  1. ম্যানসার-৪০ গ্রাম/২০লিটার বা 2 গ্রাম/প্রতি লিটার পানিতে
  2. মভেন্টো/ওবেরন-১ মিঃ/প্রতি লিঃ পানিতে (হোয়াইট ফ্লাই বা পোকা মাকড়ের আক্রমন রোধে)
  3. ওয়ান্ডার-১ মিঃ /প্রতি লিঃ পানিতে (মাঝে মাঝে দিতে হবে—)
  4. সবিক্তন -১ মিঃ /প্রতি লিঃ পানিতে (ফুল থেকে ফলের গুটি আসলে ১২/১৫ দিন পর পর)
  5. সলুবর বোরন ৩২ গ্রাম/১৬ লিঃ পানিতে (ফলের গুটি আসলে প্রতি ১৫ দিন পর পর –)
  6. লিটোসেন/ মাইক্রা পি জি আর (গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি কমে গেলে)

উপরের কীটনাশক গুলি প্রতি 7 থেকে 8 দিন পর পর ব্যবহার করার কারণে আপনার সকল সমস্যার সমাধান হতে পারে এই সিডিউল স্প্রে তে।


আর একটি কথা না বললেই নয় পেঁপের ক্ষেতে দুইটা রোগ এবং পোকার সবচেয়ে বেশি আক্রমণ দেখা যায়। এগুলো হচ্ছে

  1. ইয়োলো মোজাইক ভাইরাস
  2. হোয়াইট ফ্লাই বা পোকা মাকড় 

ইয়োলো মোজাইক ভাইরাস

ইয়োলো মোজাইক ভাইরাস আমরা হাইব্রিড পেঁপে করতে গেলে এই সমস্যাটা অনেক বেশি আক্রমণ করে এবং আমরা ভালো ফলন পেতে আমাদের ব্যাঘাত ঘটায়। সেক্ষেত্রে আমরা আমরা যদি ইচ্ছে গুলো নিয়ম অনুযায়ী স্প্রে করি তাহলে কিন্তু এগুলো থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পেতে পারি।


আরেকটা কথা বলে রাখি যখন আপনার পেঁপের গুটি আসবে অর্থাৎ ফল সেটিং হয়ে যাবে তখন কিন্তু আপনি সোলুবার বরণ সাত বা দিন বা দশ দিন পর পর স্প্রে করতে পারেন প্রতি লিটার পানিতে 1 গ্রাম হারে তারপর দেখবেন যে ফলের সাইজ সুন্দর হবে, গাছের গ্রোথ টা স্বাভাবিক থাকবে এবং আপনার ফল টি আকর্ষণীয় হবে এবং খেতেও অনেক বেশি মিষ্টি হবে।


হোয়াইট ফ্লাই বা পোকা মাকড়

মিলিবাগ পেঁপের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর একটি পোকা যা অনেক সময় গাছ বড় হয়ে গেলে গাছের কাণ্ডে, গাছের পাতায়, পাতার নিচে এই জায়গাতে অথবা ফল যখন আসে তখন দুধের মত একটু উঁচু উঁচু ধরনের এবং দেখতে অনেকটা সাগরের ফেনার মতো। এখানে পোকাগুলো তাদের ডিম পাড়ে, বাচ্চা ফোটায় তারপর গাছেরও ক্ষতি করে এবং উড়ে যায়। আমরা এটার জন্য যে ওষুধ টা ব্যবহার করবো তা হচ্ছে সবিক্রন প্রতি লিটার পানিতে 1 মিলে হারে আমরা ব্যবহার করি তাহলেও দেখব যে আমাদের রেজাল্ট টা অনেক ভাল পাব এবং সেক্ষেত্রে পোকা দমন করতে পারব। তাই যাদের এই মিলিবাগের আক্রমণ করছে বা এই সমস্যা আপনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে তারা কিন্তু সবিক্রন ব্যবহার করে এর সমাধান পেতে পারেন।


পেঁপে চাষে লাভ এবং খরচ

লাভ

যদি আপনার আদর্শ পদ্ধতিতে সবকিছুর নিয়ম অনুসরণ করে, যত্ন করে এবং প্রকৃতি আপনার সহায় হয় এবং সৃষ্টিকর্তা যদি আপনার প্রতি সহায় হোন তাহলে এক বিঘা জমি থেকে আপনি ফলন পাবেন 400 মন কারণ এক বিঘা জমিতে সর্বনিম্ন 420 টা গাছ থাকবে সেখানে আপনি 400 টা গাছের হিসেব ধরেন এবং প্রতি গাছে 40 কেজি করে ফলন ধরেন  এবং যদি বাজার দর 15 টাকা কেজি করে পান সেক্ষেত্রে

  • 1 মন = 40 কেজি
  • বাজার দর = 15 টাকা
  • 400 গাছ = 400 মন (400* 40)  = 16000 কেজি
  • 1600*15 = 240,000 টাকা

খরচ

পাঁচ থেকে ছয় মাসে খরচ হবে সর্বনিম্ন 50 থেকে 60 হাজার টাকা।


এখন লাভ হল এক লক্ষ আশি থেকে এক লক্ষ 90 হাজার টাকা এটা অন্য কোন ফসলের তুলনায় অনেক সহজ পদ্ধতি কারণ এর পরিচর্যা টা আপনি চাইলে খুব সহজেই নিতে পারেন। অন্য ফসলের মত প্রতিদিন জমিতে যেতে হবে না, প্রতিদিন স্প্রে করতে হবে না। যে কারণে নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য পেঁপে চাষ একটি বড় সমাধান হতে পারে।


কৃষি সম্পর্কিত লাভজনক চাষের তথ্য পেতে Helpnotice.net এর সাথেই থাকবেন, ধন্যবাদ।






Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
close