লাভ জনক ভাবে আগাম টমেটো চাষ পদ্ধতি জেনে নিন | Learn how to grow tomatoes in advance profitably
Learn how to grow tomatoes in advance profitably |
আজকে আমরা জানবো আগাম বা গ্রাফটিং টমেটো চাষ পদ্ধতিতে কিভাবে লাভবান হওয়া যায়।
গ্রীষ্মকালে অর্থাৎ জুন মাসের ২০ তরিখের পর থেকে আগস্টের শেষ ও সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের দিক থেকে গ্রাফটিং টমেটো চাষ করা যায়।
গ্রীষ্মকালে শেড দিয়ে ও শেড বাদ দিয়ে অর্থাৎ ২ ভাবেই টমেটো চাষ করা যায়।
তবে আমরা যখন শেড নেটের নিচে চাষ করবো তখন তাপমাত্রা একটু কম পড়বে ফলে ফলাফল টা ভালো পেতে পারি।
আমরা প্রথমে জানবো টমেটোর জাত কি কি ও কত প্রকার ?
- লাল বাহাদুর
- বারী ৮
এ ছাড়াও যদি কোন ভাবে টমেটো চষ করতে একটু সময় লেগে যায় তবে ‘মঙ্গল রাজা‘ এই জাতটি চাষ করতে পারেন। ভালো চাহিদা আছে।
মাটি নির্বাচনঃ
টমেটো চাষের জন্য সঠিক ও উপযুক্ত মাটি হচ্ছে দোঁ-আশ মাটি বা এটেল-- দোঁ-আশ মাটি।
অন্য মাটির তুলনায় এই দুই ধরনের মাটিতে গ্রাফটিং সহ সকল জাতের টমেটো চাষ ভাল হয়।
বয়সঃ
গ্রাফটিং করার ক্ষেত্রে টমেটো গাছের বয়স হতে হবে ২১-২৫ দিনের মধ্যে এবং তিত বেগুনের গাছের বয়স হতে হবে ৩৫-৪৫ দিনের মধ্যে। এরপর ছায়াযুক্ত স্থানে ৪-৫ দিন সংরক্ষন করতে হবে। তারপর ১৫ দিন বাহিরে রেখে মূল জমিতে রোপণ করতে হবে।
জমি তৈরী বা প্রস্তুত পদ্ধতি ও সার প্রয়োগঃ
প্রথমে প্রতি ৩৩ শতাংশের জন্য নিচে দেওয়া পরিমাণ অনুযায়ী সার ছিটিয়ে দিতে হয়।
প্রতি ৩৩ শতাংশ জমির জন্য সার প্রয়োগঃ
- টিএসপি ৫০-৫৫ কেজি
- এমওপি ৩০-৩৫ কেজি
- জিপসাম ১০ কেজি
- ইউরিয়া ১০-১৫ কেজি
- বোরন ২ কেজি
- দস্তা ১.৫ কেজি
( এইগুলো আলাদা ভাবে দিতে হবে )
- ফুরাডান ২ কেজি
- ভার্মি ২৫০ কেজি
- ম্যাগনেসিয়াম ৫ কেজি
- সালফার ২ কেজি
- ট্রাইকোডামা ১ কেজি
তারপর সার প্রয়োগ করে জমিতে ৫-৬ টা চাষ দিলে ভালো হয়।
উপরক্ত সকল সার বেড করার পর প্রয়োগ করে ১৫ দিন পর টমেটোর চারা রোপন করতে হয়।
বেডঃ
টমেটো চাষের জন্য উপযুক্ত বেডের সাইজ হল ৩ ফিট চওড়া ও ২ ফিটের ড্রেন ব্যবহার করা।
এরপর প্রত্যেকটি বেডে লম্বা ভাবে দুই সারিতে চারা রোপন করব।
একটি চারা থেকে আরেকটি চারার দুরত্ব ১৫ ইন্চি ও একটি লাইন থেকে আরেকটি লাইনের দুরত্ব হবে ২৭ ইনচি। অবশ্যই মালচিং দিয়ে চারা লাগাতে হবে।
পরিচর্যাঃ
সঠিক ভাবে মাচা দিতে হবে, সার দিতে হবে, রোগাক্রান্ত পাতা গুলো কেটে দেওয়া, ঘাস বা আগাছা কেটে দেওয়া, ভাইরাস আক্রান্ত গাছ গুলোকে উঠিয়ে ফেলতে হবে,
তারপর রোগ থেকে মুক্তির জন্য নিচে দেওয়া স্প্রে গুলি সিডিউল অনুযায়ী করতে হবে
1.টমেটো চাষে ব্যবহার করবেন ৬/৭ দিন পর পর
ম্যানসার ৪০ গ্রাম-২০ লিটার পানিতে
লিকার ২০ মিলি- ২০ লিটার পানিতে
ওয়ান্ডার ১ প্যাকেট-১৬ লিটার পানিতে
ইমিটাফ ৮ মিলি-১৬ লিটার পানিতে
1 নং স্প্রের ২/৩ দিন পর পর চলবেই--
সবিক্তন-১ মিলি প্রতি লিটার পানিতে
এনট্রাকল ৪০ গ্রাম ১৬ লিটার পানিতে
১০/১২ দিন পর পর---
চেলাজিংক ৭ গ্রাম ১৬ লিটার পানিতে
সলুবর বোরন ৩২ গ্রাম ১৬ লিটার পানিতে
ফলের গুটি আসলে প্রতি ১০ দিন পর পর ২/৩ বার গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি কমে গেলে লিটোসেন
ও ফুল আসা শুরু করলে প্রতি ২ দিন পর পর সকাল বেলা বাম্পার ফলন/ টমাটোম ৬/৮ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিক্স করে স্প্রে করতে হবে।
টমেটোর রোগ/ ভাইরাসঃ
আর্লি ব্লাইট
লিফট কার্ল
ও ইয়োলো মোজাইক ভাইরাস
পাতার ওপরে ছত্রাক আক্রমন করলে ছত্রাক নাশক স্প্রে দিতে হবে।
কয়েকটি ছত্রাক নাশক এর নাম হলঃ
ইউনিসাফ
মেনসার
এন্ট্রাকল
সব গুলোই প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম করে,৫ থেকে ৭ দিন পরপর ব্যাবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
ভয়ংকর পোকামাকড়ঃ
হোয়াইট ফ্লাই
এফিড
জেসি
ও লেদা পোকা
নিমাটোট
লেদা পোকার ক্ষেত্রে বেনজাইড গ্রুপের যেমন ওয়ান্ডার, সাসপেন, ফ্রোকলেন ইত্যাদি ব্যবহার করে ভালো ফলাফল পেতে পারি।
নিমাটোটের জন্য রাগবি ফ্রোডা ব্যবহার করে নিমাটোট দমন করতে পারি।
মাচাঃ
টমেটো চাষের ক্ষেত্রে A প্যাটার্নের মাচা ব্যবহার করা উত্তম।
হরমোন ব্যবহারঃ
জোয়ার হরমোন নামের একটা হরমোন আছে যা আপনারা সংগ্রহ করে এটি প্রতি লিটার পানিতে ২০ মিলি হারে অবশ্যই সকাল ৬ টা থেকে ৯ টার শুধুমাত্র নতুন ফুলে ১ দিন পর পর ব্যবহার করবেন।
খরচঃ
যদি আমরা ভালো ভাবে চাষ করতে পারি তবে প্রতি ৩৩ শতাংশে খরচ আসে ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টাকা। এখানে আমরা গাছ প্রতি যদি ৩ কেজি ফলন পাই এবং প্রতি কেজি মূল্য য়দি ৫০ টাকা হয় তবে
৩*৫০=১৫০ টাকা গাছ প্রতি
১ বিঘা = ৩০০০ গাছ
৩০০০*১৫০ = ৪৫০০০০ টাকা শুধু মাত্র ৩-৪ মাসে পেতে পারি।এরপরই গাছ বেশি দিন টিকবে।
আরো দেখুন
হাই প্রেসার ও লো প্রেসার এ যা করনীয় ???
অনেক শিক্ষা পেলাম,অসংক ধন্যবাদ